**বাংলাদেশে ইপিজেড: ইতিহাস ও অবদান**
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (ইপিজেড)। এই অঞ্চলের প্রতিষ্ঠা দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।
**ইপিজেড গঠনের ইতিহাস**
১৯৮০ সালের ২৬ এপ্রিল, বাংলাদেশ সরকার চট্টগ্রামে প্রথম ইপিজেড স্থাপনের অনুমোদন দেয়। মূল উদ্দেশ্য ছিল বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা। এ উদ্যোগের প্রাথমিক পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন তৎকালীন সরকার এবং বিশেষজ্ঞগণ।
**প্রধান অবদানকারী**
১. **চট্টগ্রাম ইপিজেড**: এটি বাংলাদেশের প্রথম এবং সবচেয়ে সফল ইপিজেড। ১৯৮৩ সালে এর কার্যক্রম শুরু হয়। শুরু থেকেই এটি দ্রুততার সাথে বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে। চট্টগ্রাম ইপিজেড দেশের অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রেখেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।
২. **ঢাকা ইপিজেড**: ১৯৯৩ সালে স্থাপিত, এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম ইপিজেড। এটি দেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত এবং দ্রুততার সাথে বিনিয়োগকারীদের প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
**অর্থনৈতিক অবদান**
ইপিজেডগুলির মাধ্যমে বাংলাদেশ অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছে। এর ফলে দেশে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রযুক্তি স্থানান্তর সহজতর হয়েছে। বর্তমানে দেশে আটটি ইপিজেড রয়েছে: চট্টগ্রাম, ঢাকা, কমিল্লা, ঈশ্বরদী, কুশটিয়া, রাঙ্গপুর, এবং ফেনী।
**বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা**
ইপিজেডগুলিতে প্রধানত দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করেছেন। তাদের বিনিয়োগের ফলে দেশের রপ্তানি বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
**ভবিষ্যত পরিকল্পনা**
বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে আরও ইপিজেড স্থাপনের পরিকল্পনা করছে এবং বিদ্যমান ইপিজেডগুলির সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে, পরিবেশবান্ধব এবং উচ্চ প্রযুক্তির শিল্প স্থাপনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
**উপসংহার**
বাংলাদেশে ইপিজেড স্থাপন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেছে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে এটি দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করেছে। ইপিজেডগুলির ধারাবাহিক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ বাংলাদেশকে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে আরও শক্ত অবস্থানে পৌঁছাতে সাহায্য করছে।
0 Comments